যে দুয়া পড়তে কখনো ভুলো না

মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত প্রিয় একজন সাহাবি। নবিজী তাকে এতো পছন্দ করতেন যে— কোথাও যাওয়ার সময় মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সাথে নিয়ে নিজের বাহনে চেপে বসতেন।

একদিন মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাত ধরে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘মুয়ায, আল্লাহর শপথ আমি তোমাকে ভালোবাসি’।

নবিজী ভালোবাসেন মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে। যাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা বাছাই করেছেন মানবতার দূত হিশেবে, গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য যাকে রহমত হিশেবে পাঠানো হয়েছে, সপ্ত আসমানের ওপারে ডেকে নিয়ে যার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন স্বয়ং বিশ্ব জাহানের অধিপতি— সেই মহা-মানব যখন কারো হাত ধরে বলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’, একবার ভাবুন তো একজীবনে সেই প্রাপ্তিটা তখন কতো বিশাল হয়ে দাঁড়ায়?

মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্মানিত সেই মহা-সৌভাগ্যবানদের একজন!

তবে, ভালোবাসার কথা জানিয়েই কিন্তু নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দায়িত্ব শেষ করেননি। ভালোবাসার কথা জানানোর পর মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তিনি এমন কিছু শিখিয়ে দেন যা তাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার কাছেও করে তুলবে মহা-সম্মানিত। মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মুয়ায, আল্লাহর শপথ আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে বলছি, প্রতি সালাতের শেষে اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ (‘আল্লাহুম্মা ‘আ-ইন্নি ‘আলা যিকরিকা, ওয়া-শুকরিকা, ওয়া হুসনি ইবাদাতিক’) বলতে যেন কখনোই ভুলো না’। [১]

ধরুন কেউ এসে আপনাকে বললো, ‘ভাই, আল্লাহর কসম করে বলছি আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমার একটা কথা শোনো, প্রতিদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে আধা-ঘণ্টা হেঁটে আসার কথা যেন কখনোই ভুলো না’। এই কথা যদি কেউ এসে আপনাকে বলে, তার ভালোবাসার ব্যাপারে আর কোন সন্দেহ আপনার থাকে না। সে আপনাকে এমনকিছু বাতলে দিচ্ছে যা সত্যই আপনার জন্য উপকার বয়ে আনবে৷ প্রত্যহ ভোরবেলা স্নিগ্ধ বাতাসে আধ-ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করতে পারাটা হতে পারে আপনার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটা অর্জন। আপনার শরীর, দেহ আর মনের জন্য তা নিঃসন্দেহে অতীব উপকারী। আপনি জানেন এই দাবিতে তার কোন স্বার্থ নেই, তার কোন অভিপ্রায় নেই।

ভালোবাসার কথা জানিয়ে নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তেমনই একটা উপদেশ দিয়েছেন। নিঃস্বার্থ। মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুও জানেন— তাঁর দুনিয়া এবং আখিরাতকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার জন্য কতোই না উপকারী সেই উপদেশ!

মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শিখিয়ে দেওয়া নবিজীর সেই দুয়ার বাংলা ভাবার্থটা এমন— ‘ইয়া আল্লাহ, আপনাকে স্মরণ করার ব্যাপারে, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপারে, অতি-উত্তমভাবে আপনার ইবাদাত করার ব্যাপারে আপনি আমাকে সাহায্য করুন’।

দুয়াটা খুব-ই ছোট, কিন্তু ছোট্ট এই দুয়ার ভেতরে যেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালার সাথে লেগে থাকার সমস্ত উপকরণ বিদ্যমান। দুয়াটায় তিনটা জিনিসের জন্য সাহায্য চাওয়া হচ্ছে:

১. আল্লাহকে স্মরণের ব্যাপারে।

২. আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপারে।

৩. অতি-উত্তমভাবে আল্লাহর ইবাদাত করার ব্যাপারে।

আল্লাহর স্মরণ তথা যিকিরকে বলা হয় আত্মার খোরাক। মোহ, লোভ, হিংসা, ঘৃণা, পাপ আর পঙ্কিলতার ছোঁয়ায় আমাদের আত্মা প্রতিনিয়ত দূষিত হতে থাকে। সেই দূষিত আত্মাকে কেবলমাত্র যিকির-ই পারে সতেজ আর সজীব করে তুলতে। আল্লাহর স্মরণ মুছে দেয় অন্তরের দূষণ আর তাতে এনে দেয় অনাবিল প্রশান্তি। কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা বলছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর স্মরণেই অন্তরগুলো প্রশান্ত হয়’। [২]

তরতর করে এগুতে থাকা সভ্যতায় আমাদের চিন্তাগুলো সর্বদা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। আমাদের চারপাশে তথ্য আর তত্ত্ব, জ্ঞান আর গরিমার বিপুল সমাহার। উপচে পড়া তথ্য আর তত্ত্বের দুনিয়ায় আমরা মাঝেমধ্যেই হাঁপিয়ে উঠি৷ জীবনের সঠিক গন্তব্য আর লক্ষ্য থেকেও হই বিচ্যুত। এমন বিভ্রান্ত আর বিরক্তির মুহূর্তগুলোতে যদি আমরা গভীরভাবে নিমগ্ন হতে পারি আল্লাহর স্মরণে, তাহলে রাহমানুর রাহিম ঠিক ঠিক আমাদের বিচ্ছিন্ন অন্তরটাকে তার সঠিক রাস্তা চিনিয়ে দেন৷

আল্লাহর স্মরণের পর দুয়াটায় যে জিনিসটা চাওয়া হয়েছে তা হলো— আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের ব্যাপারে সাহায্য। মানুষ খুব বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে থাকে। সে সর্বদা কী পায়নি আর কী পাচ্ছে না তা নিয়েই হাপিত্যেশ করে, কিন্তু যা কিছু সে পেয়েছে বা পাচ্ছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানানোর সৌজন্যবোধ খুব কম-ই তার মাঝে উপস্থিত। গ্রহ থেকে গ্রহে মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে পানি। তার আশা— যেখানে পানি থাকবে, সেখানেই পাওয়া যাবে প্রাণ ধারণের সম্ভাবনা৷ মঙ্গল, নেপচুন, প্লুটো আর ইউরেনাস সহ মহাশূণ্যের অন্যসব জায়গায় যে পানি সোনার হরিণের মতোই দূর্লভ, সেই পানিকে পৃথিবী নামক গ্রহটায় আমাদের জন্য কতো সহজলভ্য করেছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা! কিন্তু আমরা কি এই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করি? কখনো মোনাজাতে দু’হাত তুলে আল্লাহকে বলেছি, ‘ইয়া আল্লাহ, গোটা মহাবিশ্বে যা অপ্রতুল, তা কতো অনায়াশে আপনি আমাকে দান করছেন নিত্যদিন। যে নিয়ামত না হলে আমার বাঁচা অসম্ভব হতো, না-চাইতেই তা কতো অবলীলায় আমি পেয়ে যাচ্ছি৷ এই যে নিয়ামত আপনি আমাকে দান করছেন, এরজন্যে আপনার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া’।

শুধু তো পানি নয়, প্রকৃতির আলো-হাওয়া থেকে শুরু করে সমস্ত উপকরণ মহান রব আমাদের জন্য সুচারুরূপে সৃষ্টি করেছেন এবং তা সহজলভ্য করেছেন আমাদের জীবনধারণের জন্য। প্রতিদিন যে পরিমাণ অক্সিজেন বাতাস থেকে আমরা গ্রহণ করি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা যদি তার দাম নেওয়া শুরু করতেন, পৃথিবীর তাবৎ ধনকুবেররাই রাতারাতি ফকির হয়ে যাবে। আমার-আপনার মতো হাঁ-ভাতে লোকেদের কথা তো বাদ-ই দিলাম। প্রকৃতিজুড়ে এতো এতো নিয়ামত আমাদের জন্য বরাদ্দ, কিন্তু কোথাও তার জন্যে আমাদের দিতে হয় না একটা পয়সা৷ তবু— কখনো দু’হাত তুলে একবার সেই মহান রবকে একটা ‘ধন্যবাদ’ জানানো হয়নি। প্রাণ-প্রকৃতির নিয়ামতের জন্য শুকরিয়া নাহয় নাই-বা করলাম, সু-স্বাস্থের জন্য, সংসারের সচ্ছলতার জন্য, শান্তির জন্যে, আয়-রোজগারে বারাকাহর জন্যে, উত্তম স্বামী/স্ত্রী এবং সন্তানাদির জন্যে, ভালো চাকরির জন্যে এবং সর্বোপরি আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলামে অন্তর্ভুক্ত হতে পারার জন্যেও কি কখনো শুকরিয়া করেছি আমরা? তাই তো কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা বলেছেন, ‘মানুষ বড়োই অকৃতজ্ঞ’। [৩]

কৃতজ্ঞতা জানাতে পারাটা খুব বড়ো একটা গুণ। কারো দ্বারা উপকৃত হওয়ার পর তার উপকারের স্বীকৃতি দিতে যারা কুন্ঠাবোধ করে, যারা মুখ ফুটে একটা ‘ধন্যবাদ’ বলতে পারে না, ব্যক্তিজীবনে অসুখী হবার সম্ভাবনা তাদের সবচেয়ে বেশি৷ যারা অন্যের উপকারের স্বীকৃতি দিতে তৎপর, ধরে নেওয়া যায় যে তাদের অন্তরে বক্রতা নেই। যাদের অন্তরে বক্রতা নেই, জীবনে সুখী হওয়ার দৌঁড়ে তারাই সবচেয়ে এগিয়ে। ‘কৃতজ্ঞ’ হতে পারাটাও জীবনের পরম এক অর্জন। সেই অর্জন লাভের জন্য নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য চাইতে বলেছেন৷

আল্লাহর কাছে তৃতীয় যে সাহায্যটা মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুকে চাইতে বলেছিলেন নবিজী সেটা হলো— উত্তমভাবে ইবাদাত করতে পারা। এখানে লক্ষণীয় যে— প্রথম দুটো ব্যাপারের চাইতে শেষ ব্যাপারটায় একটু জোর বেশি দেওয়া হয়েছে। প্রথম দুটোয় বলা হয়েছে— আপনার যিকিরের ব্যাপারে, আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপারে। কিন্তু শেষেরটায় বলা হয়নি যে— আপনার ইবাদাত করার ব্যাপারে। বরং বলা হলো— উত্তমভাবে আপনার ইবাদাত করার ব্যাপারে। ইবাদাতের জায়গায় এসে একটু বাড়তি জোর, বাড়তি বিশেষণ যোগ হয়ে গেলো। কিন্তু, কেনো বলুন তো?

কারণ— আপনার ইবাদাত যখন ঠিক হবে, আপনার বাদ-বাকি সবকিছুই তখন ঠিক হতে শুরু করবে। উত্তমভাবে ইবাদাত করতে পারার অর্থ হলো আল্লাহর একজন উত্তম বান্দা হতে শুরু করা।

আদতে, উত্তম ইবাদাতের মাঝেই শুরুর দুইটা ব্যাপার বেশ ভালোভাবে মিলেমিশে আছে। রুকু আর সিজদায় আপনি যখন ‘সুব-হানা রাব্বিয়াল ‘আ-যীম’ আর ‘সুব-হানা রাব্বিয়াল ‘আ-লা’ বলেন, আপনি তখন মূলত আল্লাহর যিকির করেন। যখন আপনি তিলাওয়াত করেন ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল ‘আলামী-ন’, তখন আসলে আপনি আল্লাহর শোকর আদায় করেন। সুতরাং, একজন উত্তম ইবাদাত-গুজার বান্দা একইসাথে একজন যিকিরকারী এবং একজন শোকর-আদায়কারীও বটে। এইজন্যে ইবাদাতের বেলায় এসে নবিজী জোরটা বাড়িয়ে দিলেন, কারণ আগের দুইটাতে যদি কোন ঘাটতিও থাকে, শেষে এসে তা যেন পুষিয়ে দেওয়া যায়।

জীবনের সবচেয়ে সেরা অর্জন হলো আল্লাহর একজন অতি-উত্তম ইবাদাতকারী বান্দা হতে পারা। এই অর্জন যারা লাভ করতে পারে, সফলতা তাদের জন্যই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা বলছেন, ‘সেই সকল মুমিনরা সফল হয়েছে যারা তাদের সালাতে বিনয়ী’। [৪]

সালাতে বিনয়ী হওয়ার অর্থ হলো আল্লাহর সামনে ঠিক সেইভাবে দাঁড়ানো যেভাবে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু, যান্ত্রিক জীবনের যাঁতাকলে আমাদের সমস্তকিছু যখন যন্ত্রের মতো গতানুগতিক, সেখানে আমাদের সালাতগুলোতে কতোটুকু বিনয় আমরা রাখতে পারছি, সেটা নিয়ে ভেবেছি কখনো?

একটা ছোট্ট দুয়া— আল্লাহুম্মা ‘আ-ইন্নি ‘আলা যিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া হুসনি ইবাদাতিক’, কিন্তু এর মধ্যে যেন জুড়ে দেওয়া আছে জীবনের সবচেয়ে বড়ো তিনটা অর্জন লাভের গোপন রহস্য। মুয়ায ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে শিখিয়ে যাওয়া নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই ভালোবাসা-মাখা জীবনের পাঠগুলো আমরা আমাদের জীবনেও প্রতিফলিত করবো কি?

রেফারেন্স:

১. রিয়াদুস সালেহীন, যিকির অধ্যায়, হাদিস-১৪২২২.

২. সুরা আর-রা’দ, আয়াত-২৮৩.

৩. সুরা আল-হাজ্ব, আয়াত-৬৬৪.

৪. সুরা আল- মুমিনুন, আয়াত- ১-২

আরিফ আজাদ
আরিফ আজাদ

আরিফ আজাদ একজন লেখক এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট। ২০১৭ সালে 'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ' বইয়ের মাধ্যমে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। লিখেন বিশ্বাসের কথা, চূর্ণ করেন অবিশ্বাসের আয়না। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ঘুরতে এবং বই পড়তে পছন্দ করেন।

Articles: 46

64 Comments

  1. לא מבינים על מה אנחנו מדברים?
    הדברים נכתבים כאן בכלליות אבל אתם לבטח מבינים
    את הכוונה ויודעים בדיוק מה הייתם רוצים לעשות עם נערות
    ליווי. כן זה קורה כאן ועכשיו כשסקס אדיר מבין את
    המוטל עליו ומעניק לכם אפשרות לפגוש נערות ליווי מדהימות או דירות דיסקרטיות בסמוך לאזור המגורים שלכם.
    לעומתם, אחרים יעדיפו שהדירות יהיו דווקא
    במרחק מסוים מהם – לדוגמא, אדם שגר בקרית מוצקין ומחפשים דירות דיסקרטיות בקריות, יכול להעדיף שהדירה תהיה ממוקמת בקרית ים או קריית
    אתא – הסיבה לכך תהיה בדרך כלל,
    חשש שמישהו שהוא מכיר יזהה אותו.
    לדוגמא, יהיו אנשים אשר יעדיפו שהדירות יהיו כמה שיותר קרובות לבית שלהם – הסיבות לכך
    יכולות להיות בגלל שאין
    ברשותם רכב או שאין להם חשק לנסוע רחוק מדי
    בשביל ליהנות משירותי הסקס.
    תיירת מרוסייה הגיעה לארץ במטרה להכיר גברים
    תזמין אותה אליך לבית או למלון… תיירת רוסייה מגיעה למלון או לבית שלך לעיסוי… תיירת בלונדינית מהממת ומושלמת ברמה של דוגמנית על.

  2. תכשיטים הם מוצרים שכל אישה וגבר ישמחו לקבל במתנה מאהוביהם.

    תכשיטי סיגל סרן הינה חנות תכשיטים בבעלות משפחת סרן.
    תכשיטים הם לא רק לנוי, הם מסמלים מאורעות בחיים בעלי משמעות סמלית, ואנשים מיוחדים בחיינו.
    מאחר והמון אנשים סבורים כי את העיסוי מפנק הם
    יוכלו לקבל רק במסגרת יום פינוק
    מפנק בבאר שבע , הם מונעים מעצמם ליהנות מהעיסוי מפנק.
    יום שנה שלימה עד שתוושעו במקום הקדוש קבר רחל .

    מ מייבאת מעל ל-25 שנה ציוד מטבח ובר מקצועי למסעדות, בתי קפה, ברים, מזנונים, גלידריות, פיצריות, פאסט פוד ועוד.
    היכנס ומצא המלצות גולשים, חוות דעת ומידע מקצועי אודות עיסוי וטיפול
    ספא בגבעתיים. אחת ולתמיד – איך למצוא
    עיסוי ארוטי באשקלון? לפני עיסוי ארוטי
    בבאר שבע דאגו להוריד אותם. עיסוי – עיסוי קלאסי / שוודי / תאילנדי, קריות והסביבה – קרית
    מוצקין, עיסוי ב 4 ידיים עד 40 דקו.
    ● עיסוי שוודי – עיסוי עדין ומלטף ,אשר מישם בדרך
    כלל עם שמנים, מתמקד בשכבות הפחות עמוקות של
    השריר ולכן מאפשר רגיעה מלאה. שנית, כל עוד אתם מעוניינים לבצע
    עיסוי בירושלים בתדירות קבועה, תוכלו ליידע את המעסה מראש.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *