বলয় ভাঙার আগে

[ক]

মাঝে মাঝে অনলাইনের অতি-প্রগতিশীল, অতি-নারীবাদী, অতি-আধুনিক ভেকধারীরা মহিলাদের খুব ব্যক্তিগত একটা ব্যাপার, মেনস্ট্রুশান বা পিরিওড নিয়ে হাউকাউ শুরু করে। প্রতিবছরের শুরুতে, বা বছরের মাঝামাঝি কিংবা বছরের শেষান্তে তারা সম্মিলিতভাবে, হুক্কাহুয়া রব তুলে এই ট্যাবু (!) ভাঙার জন্যে সোচ্চার হয়ে উঠে।

তাদের লেখাজোকা পড়লে মনে হয়, এই একটা ট্যাবু যদি ভাঙা যায়, বাঙালি জাতিকে বোধকরি আর কেউ বেঁধে রাখতে পারবেনা। এই ট্যাবু ভেঙে গেলে, আমাদের পিটে ইকারুসের পাখা গজানো শুরু করবে, এবং সেই পাখায় ভর করে আমরা স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল সবকিছু জয় করে ফেলবো।

কিন্তু, সত্যই কি এই প্রয়াস ট্যাবু ভাঙার?

আমরা সবাই জানি, ইসলাম ধর্মে হায়া তথা লজ্জা ব্যাপারটার গুরুত্ব বেশ অনেকখানি। আমাদের ধর্মের একটা বিধান হচ্ছে, বাচ্চারা যখন একটা নির্দিষ্ট বয়স পার করে, যখন তারা নিজ থেকে অনেককিছু বুঝতে শুরু করে, ঠিক তখনই তাদের বিছানা আলাদা করে দিতে হয়। ইসলাম বলে, এই পর্যায়ে যদি বাচ্চারা পৌঁছায়, তাহলে বাবা-মা’র সাথে তারা এক বিছানায় না ঘুমোনোই উত্তম। বাচ্চা ছেলে হোক বা মেয়ে, নির্দিষ্ট বয়স পরে তার বিছানা আলাদা হয়ে যাবে, এমনটাই ইসলাম সমর্থন করে।

এটার অনেকগুলো কারণ রয়েছে, এবং তার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে, বাবা-মা’র অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো যেন তাদের দৃষ্টিগোচর না হয়। কারণ, এই বয়সের অনেককিছুই তাদের স্মৃতিতে গেঁথে থাকে যা তাকে একটা সময়ে খুরে খুরে খাবে। সে এমনকিছু দেখে ফেলার জন্যে, বা এমনকিছুর স্বাক্ষী হয়ে যাওয়ার মানসিক যন্ত্রণা থেকে কোনোভাবে মুক্তি পাবে না। ব্যাপারটা একইভাবে পিতা-মাতার জন্যেও সত্য।

সন্তান যদি এমন কোনোকিছু মনে রেখে দেয়, এবং যখন সে এই ব্যাপারগুলো খোলাখুলিভাবে বুঝতে শিখে, তখন তার মনে বারবার, ঘুরেফিরে সেই ব্যাপারগুলো আসতে থাকে। এই ব্যাপারটা সন্তান হিশেবে তার জন্যে খুব-ই অস্বস্তির এবং পীড়াদায়ক। এর ফলে, অনেকসময় সন্তানেরা বাবা-মা’র ওপর থেকে শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলতে পারে। বাবা-মা’র সাথে সন্তানের সম্পর্কটা তখন খুব হালকা হওয়া শুরু করে।

এজন্যে ইসলাম ব্যাপারটাকে গোড়াতেই সমাধান করে ফেলে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে, বাচ্চাদের জন্য আলাদা বিছানা করে দেওয়াকে ইসলাম খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে।

এখানে মূল যে কারণ, সেটা হলো লজ্জা। এই লজ্জা ইসলাম ভাঙতে চায় না। কারণ, এই লজ্জা ভাঙলে অনেক অনেক ক্ষেত্রে তাদের মধ্যকার সম্পর্কগুলো হালকা হয়ে যাবে যা একটা সমাজ, সভ্যতার জন্য কখনোই মঙ্গলজনক হয় না।

তো, এই ট্যাবু ভাঙার সমর্থকগোষ্ঠীগণ আমাদের বলতে চান যে, আমাদের মা-বোনদের-কন্যাদের পিরিওডের ব্যাপারটাকে যেন আমরাই হ্যান্ডেল করি, তাদের সাথে এসব নিয়ে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করি, এবং এতে কোনোভাবেই যেন আমরা লজ্জা না পাই, ইতস্ততবোধ না করি, পিছিয়ে না যাই।

এই কাজটাকেই তারা আমাদের বলছেন ট্যাবু ভাঙা। কিন্তু, যুগ যুগ ধরে, এই ট্যাবু যে আমরা ভাঙি নাই, আমাদের মা-বোন-কন্যার সাথে এসব ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করিনি বলে কি মানবজম কোথাও থমকে গিয়েছিলো? যায় নি কিন্তু। এসব ব্যতীতই আমাদের সমাজ, সভ্যতা যুগের পর যুগ ধরে টিকে আছে, এবং সামনেও থাকবে। কিন্তু, যারা আমাদেরকে ট্যাবু ভাঙার নাম করে সম্পর্কগুলো থেকে ‘লজ্জা’ জিনিসটাকে তুলে দিতে চাচ্ছেন, তারা কি পশ্চিমা ভঙ্গুর পারিবারিক প্রকল্পের দিকেই আমাদের টেনে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না যেখানে বাবা-মা আর সন্তানদের মাঝে নেই কোন শ্রদ্ধাবোধ আর সম্মানের বালাই?

আর, আমাকে কেনোই-বা আমার মা-কন্যা-বোনকে এসব ব্যাপারে সচেতন করতে হবে? আমার বোনের দায়িত্ব আমার মা সামলেছেন, আমার কন্যার দায়িত্ব আমার স্ত্রী সামলাবেন। বাড়তি করে, ট্যাবু ভাঙার নাম করে আমাকে কেনো সেখানে নাক ডুবাতে হবে?

আগেই বলেছি, ইসলামে লজ্জার গুরুত্ব অনেক। যখনই সকল লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে, আমি আমার বোনের, আমার মা বা কন্যার এসব ব্যক্তিগত ব্যাপারে নিজেকে যুক্ত করতে যাবো, তখনই আমাদের ভেতরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সম্মান আর গুরুত্বের যে জায়গাটা ছিলো, সেটা সমূলে বিনাশ হবে।

আজকে পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখি, মা আর ছেলে, ভাই-বোন একসাথে শর্ট ড্রেস পরে সমুদ্র সৈকতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আপনি কি আপনার মা-বোন কিংবা কন্যার সাথে এমন কোন দৃশ্য কল্পনা করতে পারেন? নিশ্চয় পারেন না। কিন্তু, যখনই ট্যাবু ভাঙার নাম করে মা-বোন-কন্যাদের সাথে আমাদের লজ্জার দেয়ালটা ভেঙে দেওয়া হবে, বিশ্বাস করুন, এই দৃশ্য তখন খুব স্বাভাবিক হয়ে উঠবে আমাদের চোখে।

পিরিওড কোন খারাপ জিনিস নয়। ইসলামের চোখে তো অবশ্যই নয়। নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস থেকে জানা যায়, আম্মাজান আ’য়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহার পিরিওড চলাকালীন সময়ে, এক চাদরের নিচে নবিজী এবং আ’য়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ঘুমিয়েছেন। এমনকি, ওই অবস্থায় নবিজী কুরআন তিলাওয়াতও করেছিলেন। এ ব্যাপারে আরো অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে যেখানে পিরিওডকে অতি-আবশ্যিক, প্রাকৃতিক এবং নারীর শারীরিক সুস্থতার কারণ হিশেবে দেখা হয়েছে।

আমাদের সম্পর্কগুলো খোলামেলা নয়, বরং সংঘবদ্ধ। আর, লজ্জা হচ্ছে আমাদের সম্পর্কের ভিত। এই ভিত নষ্ট করে দিলে, উপড়ে ফেললে পশুর ন্যায় খোলামেলা হয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর গত্যন্তর নেই। এই খোলামেলা হয়ে যাওয়াকে কেউ কেউ আধুনিকতা, প্রগতিশীলতা, ট্যাবু ভাঙা নাম দেয়। কিন্তু, এর পেছনে আমাদের ভিতর থেকে লজ্জা এবং নৈতিকতার যে ইমারত ধ্বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, সে-ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।

[খ]

‘ট্যাবু ভাঙা’ দলের অনেকে বলতে চাচ্ছেন, পিরিওডের সাথে নারীর শরীরের হাইজিনের একটা ব্যাপার জড়িত যা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই, হাইজিন নিশ্চিতকল্পে, অতি-অবশ্যই বাসার পুরুষ তথা বাবা-ভাইয়ের সাথে পিরিওড নিয়ে নারীদের উচিত খোলামেলা আলোচনা করা, এবং এটা খুব জরুরি। এখানে লুকোচাপা করলে নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকির একটা ব্যাপার থেকে যায়।

হাইজিনের ব্যাপারটাতে অবশ্যই একমত, কিন্তু, কথা হলো গিয়ে, নারীরা যে বাসার পুরুষ তথা বাবা-ভাইয়ের সাথে পিরিওড নিয়ে খুল্লাম খুল্লা আলাপ-আলোচনা করবে হাইজিন নিশ্চিত করতে, তা, তার বাবা-ভাইয়েরা কি এম বি বি এস পাশ করা ডাক্তার? যদি তা না হয়, হাইজিনের কোন জ্ঞানটা তারা মা-বোন-কন্যাকে দিতে পারে, বলেন তো?

আমার তো মনে হয়, পিরিওড নিয়ে হাইজিনের জ্ঞান বাসার পুরুষদের চাইতে নারীদের দশগুণ বেশিই থাকে। তাহলে, ঠিক কোন ব্যাপারে জ্ঞান নিতে নারীরা পুরুষদের শরণাপন্ন হবে? পিরিওড নিয়ে খোলামেলা আলাপ করবে? যারা ঘরের নারীদের পিরিওড ইস্যুতে হাইজিনের জ্ঞান দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন, আপনারা যদি ডাক্তার না হয়ে থাকেন, তাহলে এই বিষয়ে কোন জ্ঞান আপনার ঘরের মা-বোন-কন্যাকে আপনি দিতে পারেন? আপনাদের তো আর পিরিওড হয় না যে, এই ব্যাপারে আপনাদের আগ থেকেই অভিজ্ঞতা থাকবে। তাহলে?

যেহেতু বাসার নারীদের এই ব্যাপারে প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা আছে, সেহেতু ব্যাপারটাকে মেয়েরা-মেয়েরা সামলালেই তো হয়ে যাওয়ার কথা। আপনি যখন হাইজিনের ওপর এক্সপার্ট নন, তাই আপনার এখানে সংযুক্ত হওয়াটা নিতান্তই অদরকারি, বাড়াবাড়ি।

তারপরও, আপনি যদি চান যে আপনার বাসার নারীরা পিরিওড ইস্যুতে যুগের আধুনিক হাইজিনের ব্যাপারগুলোও জানুক, তাহলে তাদের হাতে একটা স্মার্টফোন দিয়ে দিন। তারা যদি ইতোমধ্যেই স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকে, তাহলে নিশ্চিত থাকুন, গুগল, ইউটিউবের মাধ্যমে, আধুনিক সময়ের ওই জ্ঞানগুলো তারা ইতোমধ্যেই নিয়ে ফেলেছে। আপনার আর এটা নিয়ে চিন্তিত না হলেও চলে।

কিন্তু, নারীদের প্যাড কিনে দিতে হলে তো বাবা-ভাইকে বলাই লাগবে, তাই না?

প্রগতিশীলদের এই যুক্তি দেখে একবার ফিক করে হেসে ফেলেছিলাম। তাদের নারীরা শপিংমলে গিয়ে নিজের পছন্দমত জামা কিনে আনতে পারে, নিজের প্রসাধনী সামগ্রী বেছে বেছে, কোয়ালিটি দেখে দেখে তারা কিনে আনতে পারে ঠিক, কিন্তু নিজের প্যাড নাকি তারা কিনে আনতে পারবে না!

একদল বলছেন, ‘প্যাড কিনতে গেলে দোকানের পুরুষগুলোর চেহারা কেমন হয় আপনি জানেন?’

পুরুষের চেহারা কেমন হয়, তা নিয়ে তো আপনার চিন্তা করার কথা না। আপনি সমাজ থেকে ট্যাবু ভাঙতে চান। এখন, ট্যাবু ভাঙতে গেলে, আরেকজনের চেহারার কি হাল হচ্ছে, তা নিয়ে পেরেশান হওয়া তো আপনার সাজে না।

নারীদের স্বনির্ভরতার গল্প শুনানো মানুষগুলো, প্যাড কেনার ইস্যুতে নারীদের এতোবেশি বাবা-ভাই নির্ভর হয়ে যেতে বলছে দেখে হাসি দমিয়ে রাখা দায় হয়ে যায়।

কিন্তু, নারীদের তো প্যাড কিনতেই হবে। তার মানে কি, আমি চাচ্ছি মহিলারা গিয়ে দোকান থেকে প্যাড কিনে আনুক?

তা অবশ্যই নয়। প্রত্যেকটা পরিবারে, যেকোন একজন পুরুষ কারো না কারো স্বামী, আর, যেকোন একজন নারী কারো না কারো স্ত্রী। এভাবেই তো পরিবার গঠন হয়।

স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এই ব্যাপারগুলোতে লুকোচাপার যেহেতু কিছু নেই, এবং তার দরকারও নেই, তাই, পরিবারের যিনি স্ত্রী, তিনি স্বামীকে দিয়ে যদি অনেকগুলো প্যাড আনিয়ে রাখেন, তাহলে তো কন্যাকে আর বাড়তি করে বাবাকে বলতে হয় না, কিংবা বোনকে মুখ খুলতে হয় না ভাইয়ের কাছে।

যে পরিবারে মা নেই, ওই পরিবারের মেয়ে কি করবে?

তার ভাইয়ের স্ত্রী নিশ্চয় আছে।

যদি তা-ও না থাকে, তাহলে?

দুনিয়াটা আসলে অনেকদূর এগিয়েছে। মেয়েটার বান্ধবি আছে, তার চাচী, চাচাতো বোন, মামাতো-ফুফাতো-খালাতো বোনেরা আছে। আছে খালা, ফুফু, মামীরা। তার আশপাশে, তাকে সাহায্য করার জন্যে অসংখ্য মহিলারা বিদ্যমান থাকেই। এটাই সমাজের সার্কেল। এতোসব অপশান বাদ দিয়ে, আপনাকে জোর করে কেনোই-বা পিরিওড ইস্যুতে বাবা আর মেয়েকে, ভাই আর বোনকে মুখোমুখি বসাতে হবে?

যদি, ধরে নিলাম তা-ও হলো না, তখন?

দুনিয়া এখন অনেক সহজ। অনলাইনে অর্ডার করলে যেকোন জিনিস দোরগোড়ায় চলে আসে আজকাল। আধুনিক সময়ের হাইজিন জ্ঞান বিলাবেন, আধুনিক সমাজের সহজ সেবাটা নিবেন না?

[গ]

উপরের সবগুলো কথা তাদের উদ্দেশ্যেই বলা, যারা ট্যাবু ভাঙার নাম করে, আমাদের সম্পর্কগুলো থেকে লাজ-লজ্জা তুলে, আমাদেরকে একটা ভঙ্গুর সমাজব্যবস্থার দিকে নিয়ে যেতে চান যার আত্মিক বলি আজ পশ্চিমা দেশগুলো।

কিন্তু, এ-কথা অনস্বীকার্য যে, আমরা যারা পুরুষ আছি, আমরা চাইলেই, এই ট্যাবু না ভেঙেই, এর একটা সুন্দর সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারি।

আমরা যারা বাবা আর স্বামী আছি, আমরা জানি আমাদের মেয়েদেরকে প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটা সময় একটা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেক্যুলার সমাজ চায়, আমরা যেন নারীর এই একান্ত ব্যাপারটা নিয়ে পরিবারগুলোতে, বাবা-মেয়ে, ভাই-বোন মিলে আমরা যেন খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করি। কিন্তু, আমরা যদি তাদের কথামতো এই কাজ শুরু করি, তাহলে একটা হায়া তথা লজ্জার যে কাঠামোর ভিতর দিয়ে আমরা বেড়ে উঠি, সেই কাঠামো রাতারাতি ভেঙে পড়বে এবং বিনাশ হবে আমাদের মূল্যবোধের। আমাদের এই লজ্জাটা ধরে রাখতে হবে। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।

তাহলে, এই লজ্জা না ভেঙেও আমরা কিভাবে পারি এর সমাধান করতে?

আমরা একসাথে বেশ অনেকগুলো প্যাড কিনে আমাদের স্ত্রীদের হাতে দিতে পারি। আমার স্ত্রী সেটা আমার কন্যার কাছে, আমার বোনের কাছে পৌঁছে দিতে পারে অনায়েশে।

তাছাড়াও, সংসারের বাজারাদির সাথে, একটা আনুষঙ্গিক জিনিস হিশেবে প্যাডটাও তালিকায় রাখা যায়। আপনার তো দরকার নেই প্যাড এনে বোন আর কন্যার হাতে হাতে তুলে দেওয়ার। তেল এনে সেটা নিয়ে আপনি নিশ্চয় চুলার পাড়ে গিয়ে বসে থাকেন না? প্যাড এনে বাসার একটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিন। হয়ে গেলো। সেটা যাদের দরকার, তারা সেখান থেকে নিয়ে ব্যবহার করবে। এটা নিয়ে ক্লোজড-ডোর মিটিং করার কথা যারা বলে, তারা ট্যাবু নয়, আপনার পরিবার থেকে হায়াটাকে নির্মুল করে দিতে চায়। তাদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে, নিজের দায়িত্বটা করে ফেলুন।

আর, রামাদান মাস এলে ঘরের কোন মহিলাকে জিজ্ঞেস করার দরকার নেই যে, কেনো সে রোজা রাখছেনা। কাউকে রোজা রাখতে না দেখলে, সালাত আদায় করতে না দেখলে আপনার বুঝে নেওয়া উচিত যে, তারা হয়তো-বা শারীরিক প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যাচ্ছে। অযথা প্রশ্ন করে তাদের অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দেওয়ার মানে নেই।

রামাদান মাসে আপনার স্ত্রী যদি এই প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যায়, তাকে বলুন যেন তিনি প্রকাশ্যেই খাওয়া-দাওয়া সারেন। লুকিয়ে খাওয়ার কোন দরকার নেই। আপনার স্ত্রী এই রেওয়াজ চালু করলে, আপনার মেয়েও করবে, আপনার বোনও করবে। আপনার স্ত্রীকে বলে দিন আপনার মেয়ে আর বোনকে বুঝিয়ে বলতে সব। লজ্জা না ভেঙেও কিছু জিনিস সমাধা করা যায়। ট্যাবু ভাঙা মানেই সবসময় সবকিছু খুল্লাম খুল্লা হয়ে যাওয়া নয়।

আজকে যারা এই ট্যাবু ভাঙার নাম করে, ভার্চুয়ালে নিজের মেয়ের, বোনের, স্ত্রীর পিরিওডের রসালো গল্প লিখছে, রক্তাক্ত ন্যাপকিনের ছবি আপলোড করছে, তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। তারা ট্যাবু ভাঙার নাম করে, সমাজ থেকে লজ্জার দেয়াল ভেঙে দিয়ে, পশ্চিমা দেশের ন্যায় আমাদেরকে বেহায়াপনায় ডুবাতে চায়।

আরিফ আজাদ
আরিফ আজাদ

আরিফ আজাদ একজন লেখক এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট। ২০১৭ সালে 'প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ' বইয়ের মাধ্যমে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। লিখেন বিশ্বাসের কথা, চূর্ণ করেন অবিশ্বাসের আয়না। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ঘুরতে এবং বই পড়তে পছন্দ করেন।

Articles: 46

31 Comments

  1. היא עכשיו בחיפה והקריות ורוצה להגיע עד אליך להעניק לך מסאג מעולם אחר ועיסוי מפנק.
    בעיסוי הטנטרי, אנחנו יכולים לחוות את הרגע הנוכחי במלואו, מבלי לדאוג לאף אחד אחר.
    לא כולם מסכמים את הבילוי עם נערת ליווי בחוויה
    לוהטת בין 4 קירות. אני רונה נערת ליווי ישראלית ברמה ממש גבוהה.
    עוד סטיגמה שלרבים יש היא לגבי
    ניקיון המקום ורמת השירות; דירות דיסקרטיות
    בפתח תקווה הן דירות נקיות ומאובזרות היטב ממש כמו
    חדר בבית מלון. מגוון חבילות שוות ומפנקות במיוחד
    בעיר פתח תקווה באפשרות להזמנה ישירה
    באתר. לא מוותרים להגיע לספא, גם
    אם אין לך זוג, כי היום תוכלו למצוא מגוון חבילות ספא רבות שמותאמות גם ליחידים.
    באתר שמחים להעמיד לרשותכם מגוון רחב
    של דירות דיסקרטיות מאובזרות אליהן
    ניתן להזמין עיסוי אירוטי בירושלים.
    למומחה לעיסוי רועי מצוינים יש כישרון ייחודי,
    ידע רחב וניסיון רב בעיסוי. מכיוון שאילת היא
    עיר קטנה וקל להתנייד בה, לא יעבור זמן רב מרגע ההזמנה ועד הרגע בו תופיע אצלכם אישה מושלמת שמוכנה ומזומנה להתפנק אתכם בבילוי אינטימי מסעיר.
    הבחורות שמציעות שירות בדירות
    דיסקרטיות, הן רב גוניות ושונות אחת מהשנייה,
    הן במוצא, הן במבנה הגוף, הן בגיל והן
    במראה החיצוני הכללי – כך שמי שמאוד חשוב לו המראה החיצוני ויש לו אף דרישות פרטניות בנושא, יוכל למצוא את
    המענה המושלם למבוקשו, כאשר כל מה שהוא
    צריך לעשות לשם כך זה להתמיד בחיפוש.

  2. נערות ליווי תל אביב – את המפגשים השווים האלו אי אפשר
    לשכוח, פתאום באמצע החיים מגיע נערת ליווי מתל
    אביב ומספקת את תשובת התשובות-
    בילויים מדהימים ולוהטים עם בחורה
    מדהימה ושווה במיוחד. Sitara – סיטארה סוויטת יוקרה פרטית – Sitara – סוויטת יוקרה פרטית הממוקמת
    בגליל העליון במושב דלתון, מול נוף
    מדהים ועוצר נשימה, סוויטה יוקרתית לזוג בלבד עם בריכה צלולה, גקוזי ספא, עיצוב יוקרתי ומרשים, למידע נוסף היכנסו..

    אם תחשבו על זה, כל מה שאתם צריכים בכדי להתפנק בעיסוי הוא
    לפנות בלוח הזמנים שלכם שעה או שעתיים בלבד.

    לפני שיתחיל כל טיפול של עיסוי מגבר לגבר בחולון, המעסה, על פי בירור זה הוא יבנה תכנית טיפולים אשר תתאים לכם, ולכם בלבד.
    הם מוצאים את הדברים החשובים ביותר- את הרוגע,
    אבל לא מתפשרים על הפרטיות שלהם.

    איך מוצאים נערות ליווי באשקלון בתל-אביב צפון?

    היו כנים ושקופים כבר במעמד השיחה –
    ספרו לאותה נערת ליווי למה אתם מזמינים
    את השירות שלה, למה אתם מצפים והאם יש לכם דרישות מיוחדות ממנה.
    לכן, אם יש לכם דרישות נוספות, כדאי שתוודאו כמה
    הבחורה גובה עליהם ותכינו את
    סכום הכסף המתאים מראש. אבל, אם יש לכם דרישות לגבי המראה
    שלהם, לגבי השירותים אותם היא מציעה,
    או לגבי כל נושא אחר אשר קשור אליה או לשירותים שלה,
    חשוב שתקפידו להזמין אותה מראש, מה שיאפשר לכם לבחור את הבחורה המתאימה
    ביותר ולוודא שהיא תהיה זמינה.

  3. אצלנו תוכלו להסיג מגוון רחב של נערות ליווי לעיסוי שמעניקות מעסות
    מקצועיות אשר יספקו לכם את העיסוי שתמיד
    חלמתם עליו. אבל אם זה חדש עבורכם אתם אולי לא בטוחים
    כיצד ניתן לארגן את הבילוי עם נערות ליווי.
    מאיפה מזמינים נערות ליווי?
    נערות ליווי בבת ים מעניקות פתרון לגברים
    רבם המתגוררים בעיר, או המגיעים לביקור בעיר.
    נערות ליווי שוות, לוהטות, נוטפות סקס, הן
    מביאות איתן את הבשורה החדשה, זו שלא באמת הכרתם.
    נערות ליווי בחולון הלוהטות ביותר מענגות כל חבר שהן מכירות, ומממשות את הפנטזיות האינטימיות העמוקות ביותר שלו.
    נערות ליווי בחולון – בנות חמות
    בחולון – מודעות חדשות של בנות חמות ומפנקות לחווית סקס אדיר.
    מימון של טיול. בסופו של דבר אלו הן נערות
    טובות ובעלות שאיפות גבוהות בחיים.
    אני הולך להעביר את היד שלי משם כל כךמקום מצלמת כעת להציגחולצה החזייה שלי
    החליקה שום דבר שונה לי. כמו כן, העיסוי נועד לטפל
    בפגיעות ונזקים אשר קורים לעיתים תכופות
    בספורטאים, כגון: תסמונת תעלת שורש כף היד (carpal tunnel syndrome),
    דלקות שרירים ועוד. התוצאה העיקרית של השינויים האלו היא הנעת שרירים לקויה בגוף, משם הדרך לכאבים, הגבלות בתנועה ואפילו דלקת
    מתקצרת מאוד. זוהי הדרך הטובה ביותר שמאפשרת לכם לקבל עיסוי מפנק ומרגיע כזה
    שישחרר את כל השרירים ויגרום לכם
    להיות יותר משוחררים בהמשך.

  4. আসসালামু আলাইকুম। বিষয়টা নিয়ে আমিও চিন্তিত ছিলাম।এটা কি আসলেই ট্যাবু ভাঙ্গা নাকি কোনো ফাঁদ। আপনার লেখায় এখন তা পরিষ্কার।আল্লাহ সুবহানাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করুন।

  5. জ্বি,আমাদেরকে এই বিষয়ে লজ্জাবোধটা রাখতে হবে।
    আমরা ট‍্যাবু ভাঙার পক্ষে নয়।

  6. যক্তি আর সঠিক কথায় ভরপুর এক লিখা। বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন হওয়ার জন্য প্রত্যেক পুরুষের এই লেখাটি পড়া উচিত।

  7. আলহামদু‌ল্লিাহ ভাই খুবই সুন্দর লেখা।
    মহান আল্লাহ আপনা‌কে নেক হায়াত দান করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *