আড়ং কিংবা ব্র্যাক— এরা যে আমাদের ভাবাদর্শ ধারণ করে না, বরং উল্টোটাই তারা ধারণ করে, সে ব্যাপারে আশা করি সচেতন মহল মাত্রই অবগত।
আড়ং-এ দাঁড়ি রাখার জন্যে একজনের চাকরি হয়নি এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। দাঁড়ি নবিজী সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ এবং এই সুন্নাহকে অবজ্ঞা, অবহেলা আর ঘৃণা করে কেউ যদি খবরদারি করতে চায়— আমাদের অবশ্যই উচিত সে-ব্যাপারে সতর্ক হওয়া, লোকজনকে সচেতন করা এবং এটার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ করা।
তবে, এখানে আমি আরো একটা ব্যাপার নিয়ে একটু আলাপ করতে চাই।
আমাকে যদি কেউ এসে বলে, ‘ভাই, সুদী ব্যাংকে চাকরি করা উচিত হবে কি?’
আমি যদ্দুর জানি— আমাদের ‘আলেমরা কখনোই সুদী ব্যাংক কিংবা এনজিও-তে চাকরি করাটাকে জায়েজ বলেন না। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড়িয়েই আছে সুদের ব্যবসার ওপরে। যেহেতু এসব জায়গায় চাকরি করাটাকে আলেমরা জায়েজ বলেন না, সেহেতু এসব প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির অফার এলে কিংবা চাকরির জন্যে এসব প্রতিষ্ঠানে ধর্না দেওয়ার আগে সচেতন মুসলিম মাত্রেরই কয়েকবার ভাবা উচিত।
আড়ং-এর মাদার বিজনেস যেহেতু ব্র্যাক, আর ব্র্যাক যেহেতু এনজিও এবং এনজিওগুলোতে চাকরি করা যেহেতু জায়েজ নেই— আড়ংয়েও চাকরি করা কিংবা করতে চাওয়াটা কতোটুকু উচিত— তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
তবে, আড়ং ব্র্যাকের একটি প্রতিষ্ঠান, ব্র্যাকের কোন সাব-ইন্সটিটিউশানে চাকরি করা বৈধ হবে কি-না, এটা আমাদের ‘আলেমরা জানাবেন। সেই ফতোয়া দেওয়ার এখতিউয়ার আমার নেই। আমার আলাপটাও তাই একেবারে ভিন্ন একটা জায়গায়।
আড়ং এবং এ-জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক নারী কর্মীদের উপস্থিতি বিদ্যমান। সেলসম্যান থেকে শুরু করে তাদের ক্যাশ কাউন্টার— সবখানে নারী আর নারী। আপনি কোন একটা জিনিস ছুঁতে যাবেন, পাশ থেকে এক সুন্দরী রমনী এসে আপনাকে বলবে, ‘স্যার, এটা অমুক সুতোর তৈরি। পরে আপনি অসম্ভব আরাম পাবেন। আপনাকে মানাবেও বেশ’।
ক্যাশ কাউন্টারে যাবেন— সেখানেও এক সুনয়না তরুণী আপনাকে বলবে, ‘একটু সময় দিবেন স্যার, প্লিয’।
আমার কনসার্ন হচ্ছে— দাঁড়ি রাখা একটা বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ, কিন্তু নিজের দৃষ্টির হেফাযত করা হচ্ছে একেবারে ফরয প্রতিটা মুসলমানের জন্য।
আপনি যদি আড়ং-এ চাকরি করতে যান, এই সকল সুন্দরী, সুনয়না তরুণী সর্বক্ষণ আপনার আশপাশে ঘুরঘুর করবে। তারা হবে আপনার কলিগ। প্রতিদিন অনেক অনেকবার আপনাকে তাদের সাথে কথা বলতে হবে, কাজ করতে হবে।
ফলে, দাঁড়ি রাখা সুন্নাহ বা মতান্তরে ওয়াজিব বিষয়ে আপনি ছাড় দিতে রাজি নন, কিন্তু যেখানে চাকরি করলে ‘দৃষ্টি হেফাযত’- এর মতো ফরয ব্যাপারে আপনাকে ‘ছাড়’ দেওয়া লাগতে পারে, সে ব্যাপারে আপনি কি ভাববেন না?
দাঁড়ি রেখে আড়ং-এ চাকরি করতে যাওয়ার সময় আপনার কি এটাও ভাবা উচিত নয় যে— সেখানে গেলে আপনার দৃষ্টির হেফাযত হবে কি-না?
আড়ং যেহেতু স্বায়ত্তশাসিত একটা প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের প্রতিষ্ঠানে পুরুষ বেশি কাজ করবে নাকি নারী— সেটা একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমি এটাও বলতে পারি না যে— আড়ংয়ে চাকরি করা প্রতিটা রমনীকেই হিজাব পরিয়ে দিতে হবে। সেই অধিকার আমার নেই। কিন্তু আমি আমাদের ওই ভাই, যিনি দাঁড়ির ব্যাপারে সতর্ক, ইসলাম মানেন এবং বুঝেন, তাকে সতর্ক আর সচেতন করতে পারি। আমার বলার জায়গাও অতোটুকুই।
আড়ং দাঁড়ির জন্য একজনকে চাকরি দেয় নি— আড়ংয়ের এমন দৃষ্টতার জন্য প্রতিবাদ জানাই। তবে, দাঁড়ি রেখে আড়ং-এ চাকরি করতে যাওয়া ভাইগুলোর জন্যেও ভয় পাই— একটা ফরয ‘ছাড়’ দেওয়ার ভয়।
অনেক গুছানো কিছু লেখা… এবং বাস্তব জীবনে কাজে লাগবে ইনশাআল্লাহ????
সুগভীর ভাবনা
জাজাকাল্লাহ খাইরান
আড়ং ৱূপী সব প্ৰতিষ্ঠান গুলোই এই সব শুৱু কৱেছে। আল্লাহ আমাদেৱ হেফাজত কৱুন। আমিন
সমসাময়িক এসব বিষয় নিয়ে লিখে আমাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আপনার কাছে অনেক অনেক কৃতজ্ঞ।
এভাবে তো কখনো ভাবা হয়নি! মুহতরাম অসাধারণ লিখেছেন।