সুখী হওয়ার, স্ট্রেস কমানোর এবং একটা চাপ-বিহীন জীবন যাপনের জন্য যা সবচেয়ে বেশি দরকারি তা হলো— মানুষের ওপর থেকে প্রত্যাশার পারদটাকে যতোটা সম্ভব কমিয়ে আনা। আপনার প্রত্যাশা যতো স্বল্প, ব্যস্ততা এবং অস্থিরতাও ততো কম। প্রত্যাশা যতো বাড়ে, সত্যিকার অর্থে আপনার ব্যস্ততা এবং অস্থিরতাও ততো বেড়ে যায়।
একেবারে বাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টা করছি। বছর দুয়েক আগে একজন মানুষের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয় এবং তিনি আমার লেখক পরিচয়টাও জানতেন। যেহেতু আমার লেখক পরিচয়টা তিনি জানেন এবং আকারে-ইঙ্গিতে বুঝাতে চান যে তিনি আমার গুণমুগ্ধ পাঠক, ফলে আমি আশা করেছিলাম, আমাকে দেখতে পেয়ে তিনি কী গদগদ-ই না হবেন!
আমার সাথে সাক্ষাৎ করে তিনি যারপরনাই খুশি যদিও হয়েছিলেন, কিন্তু একেবারে আত্মহারা হয়ে যাবে বলে আমার অবচেতন মন যে কল্পনা করেছিলো, সেরকমটা না হওয়াতে আমি ভীষণ কষ্ট পাই সেদিন। বেশ অস্থির লাগা শুরু করে ভিতরে ভিতরে। মনে হতে লাগলো— ‘ধুর, দেখা না করলেই ভালো ছিলো’।
অন্য আরেকটা আড্ডার কথা বলি। ওই আড্ডায় বইয়ের জগতের বেশ গণ্যমান্য কতিপয় ব্যক্তিবর্গের সাথে সাক্ষাৎ হয় আমার, কিন্তু তাদের আমি জানতে দিইনি যে আমি লেখক আরিফ আজাদ। যতোটুকু আদর-আপ্যায়ন, খাতির করা যায় তার সবটুকুই তাদের কাছ থেকে পেলাম। সেবার আমার একটুও মন খারাপ হয়নি এবং খানিক অস্থিরতাও ভর করতে পারেনি অন্তরে। একটাবারের জন্যও মনে হয়নি যে— আমি যে সম্মানের প্রাপ্য, তা ওরা আমাকে দিলো না।
প্রথম ঘটনায় আমি শয়তানের ওয়াসওয়াসার শিকার নিঃসন্দেহে। সে আমাকে ফুসলিয়ে বলেছে— ‘দেখো, তুমি কতোবড় একজন লেখক! হাজার হাজার মানুষ তোমাকে একনজর দেখবার জন্যে মরিয়া, আর এই লোক কি-না তোমাকে দেখে একটুও বিস্মিত হলো না, আবেগে আত্মহারা হলো না! কী আণ্ডারেস্টিমেইটটাই না লোকটা তোমাকে করলো!’
শয়তানের এই ওয়াসওয়াসা আমার ভিতরে একটা আত্ম-অহমিকার বুদ্বুদকে জাগিয়ে দিলো এবং আমি তাতে বিভ্রান্ত হয়ে বিশ্বাস করে নিলাম যে— সত্যই তো, আমাকে দেখে তো আনন্দে তার আটখানা হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু কী সাদামাটা অভ্যর্থনাই না পেলাম! এটা আমার সম্মানের সাথে আদৌ যায়?’
এই ওয়াসওয়াসা আমাকে দুটো ব্যামোর দিকে ঠেলে দিলো:
১. অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা
২. মানসিক অস্থিরতা
এর কারণ কী জানেন? প্রথম ঘটনায় আমার প্রত্যাশার পারদ ছিলো হিমালয় ছোঁয়া। কিন্তু হিমালয়ের বিপরীতে যখন প্রাপ্তির খাতায় মিললো তাজিংডং পর্বত, তখন তো খারাপ লাগা আর অস্থিরতা বাড়বেই। কিন্তু দ্বিতীয় ঘটনায় আমার প্রত্যাশার পারদ একেবারে নিম্নমুখী। হিমালয় কিংবা তাজিংডং নয়, দাঁড়াবার জন্য পায়ের নিচে একটু খড়কুটো পেলেই আমি বেজায় খুশি। দ্বিতীয় ঘটনার লোকেরা যেহেতু জানতো না আমার সত্যিকার পরিচয়, সুতরাং তখন তাদের কাছে আমি একেবারে সাধারণ এক অতিথি। সেখানে আমি যা পাই, তাতেই বিলকুল আনন্দিত। যেহেতু ‘আরিফ আজাদ’ হিশেবে তাদের সামনে আমি যাইনি, তাই শয়তানও আমাকে ওয়াসওয়াসা দেওয়ার রাস্তা খুঁজে পেলো না। সে আমাকে বোঝাতে পারলো না— ‘দেখলে, তোমার মতো এতোবড় পাবলিক ফিগারকে তারা কি-না একেবারে সাদামাটা আয়োজনে বিদেয় করেছে!’
আমাকে এই ওয়াসওয়াসা দেওয়ার কোন রসদ শয়তানকে আমি দিইনি। ফলে সে আমার প্রত্যাশার পারদ বাড়াতে পারেনি। যেহেতু প্রত্যাশা একেবারে কম ছিলো, তাদের হাসিমুখে কথা বলাটাও আমার কাছে তখন বাড়তি পাওনা।
শয়তানের ফাঁদ থেকে আমরা কখনোই নিরাপদ নই। সে ডান-বাম, উপর-নিচ সবদিক থেকে আমাদের দিকে ধেয়ে আসে প্রতিনিয়ত। শয়তানকে ওয়াসওয়াসা দেওয়ার রাস্তা খুলে দিয়ে যদি আপনি তার বিরুদ্ধে ঢাল-তলোয়ার নিয়ে মাঠে নামেন, আপনার পরাজয়ের সম্ভাবনা শতভাগ। কারণ, শত্রুকে আপন ঢেরায় ঢুকতে দেওয়াটা বুদ্ধিমান বীরের কাজ নয়। তাকে পরাস্ত করতে হলে যে পথে, যে জিনিস দেখিয়ে সে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারে, আপনার অস্ত্র আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে, সেই রাস্তাটাই রুদ্ধ করে দেওয়াটাই যুদ্ধজয়ের অন্যতম কৌশল।
নফসের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দেওয়া শয়তানের সবচেয়ে কার্যকরী একটা কৌশল। প্রত্যাশার লাগাম টেনে ধরুন, জীবন থেকে চাপ কমে যাবে।
The very next time I read a blog, Hopefully it wont disappoint me just as much as this particular one. I mean, I know it was my choice to read, however I really thought youd have something interesting to say. All I hear is a bunch of crying about something that you can fix if you werent too busy seeking attention.
jajakallahu khiran
যতই পড়ি ততই মুগ্ধ হয় আল্লাহ আপনাকে নেক হায়াত করুক
Excellent post. I definitely appreciate this website. Thanks!
এই অভিজ্ঞতা আমারও আছে প্রিয় ভাই, একটা সময় আমি কিছু মানুষের খুব প্রিয় ছিলাম এবং তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা করতাম যদিও সেটা পাওয়ার অধিকার শুধু আমারই ছিল, কিন্তু যখন আমি সেটা পেলাম না তখন আমি ভিশন কষ্ট পেয়েছিলাম। তারপর আপনার একটা লেখা আমার জীবন বদলে দিয়েছে ????????প্রিয় ভাই ????????। হযরত মুসা (আঃ) ও দুই মেয়ের ঘটনা,, ওই ঘটনায় আপনি বলেছেন আমরা যা কিছু করব তা কেবলমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য করব, আমার কাজে কে কি ভাবল তাতে আমার কিছু যাবে আসবে না আমি শুধু এই চিন্তা করব যে আল্লাহ কি ভাবলেন, আমি আল্লাহকে কতটুকু ইমপ্রেস করতে পারলাম। তখন থেকে জীবনে আর কোনো কষ্ট নেই ভাই।
আল্লাহর জন্য আপনাকে ভালোবাসি প্রিয় ভাই “I love you”❤️❣️????????????????
জ্বি,অতিরিক্ত প্রত্যাশা মানুষের জীবনে অস্থিরতা নিয়ে আসে।
আসসালামু আলাইকুম
জাযাকাল্লাহু খায়রান ভাই। এই লেখাটা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। এমন সময় এই আর্টিকেল টা পড়লাম যখন আমাকেও শয়তান কুমন্ত্রণা দিয়ে বিভোর করে রেখেছিলো।আপনি একদম সঠিক বলেছেন অন্যের উপর প্রত্যাশা যত কম রাখা যাবে লাইফে তত বেশি ভালো থাকা যাবে।জাযাকাল্লাহু খায়রান
আসসালামু আলাইকুম ভাই। আমি “শয়তানের কুমন্ত্রণা” নামক একটা বইয়ে পড়েছিলাম, শয়তান উপর থেকে কুমন্ত্রণা দিতে পারে না, উনি এই ব্যাপারে অনেক যুক্তি ও প্রেস করলেন। কিন্তু আপনি বললেন শয়তান উপর থেকেও আমাদের আক্রমণ করে। আমার বোঝার ভুল হলে হ্মমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে একটু বুঝিয়ে দিবেন ভাই।
আলহামদুলিল্লা, উক্ত লিখা অনুযায়ী আল্লাহ আমাদের বুঝার এবং আমল করার তৌফিক দান করুন।
আলহামদুলিল্লাহ্। আমিও মাঝেমাঝে এমন মানসিক অস্থিরতায় ভুগি শুধু মাত্য অন্যদের কাছে অতিরিক্ত প্রত্যাশা করার কারণে। এখন থেকে অন্যের প্রতি প্রত্যাশা কমিয়ে নিবো ইন শা আল্লাহ
লেখাটা, মাশ আল্লাহ অনেক সুন্দর লাগলো। কিন্তু পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা শয়তানের আক্রমণ সম্পর্কে বলেছেন, অতঃপর অবশ্যই আমি( শয়তান) তাদের সামনে, পিছনে, বাম ও ডানদিক থেকে আসব। আর আপনি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ হিসেবে পাবেন না। -সুরা আরাফ ১৭
কিন্তু আপনার এই পোস্টে উপর এবং নিচ থেকে শয়তানের আক্রমণের কথা লেখা আছে! এই বিষয়টা যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন?
Sir, I am Abdullah Al Nadrun I am currently studying in class 10 . I am from lovelane, Chittagong . Sir I have a request that please write about the pursuit of Happiness in Islam and the Concept of inner peace in Islam and how can we achieve inner peace. And how can we feel Allah and how can we feel connected to Allah sometimes I can’t feel the existence of Allah my Iman and taqwa decreases sir how can I increase my Iman and taqwa please help.